২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটি ট্রাকে ৫৩ জন অভিবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া একটি মানব পাচারকারী চক্রের নেতাকে শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হিউস্টন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
কৌঁসুলিদের মতে, চক্রটির ৩০ বছর বয়সী নেতা ফেলিপ ওর্দোনা-তোরেস একটি মানব পাচারকারী দলের নেতৃত্ব দেন। মানব পাচারকারী দলটি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস ও মেক্সিকো থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসে।
মার্চ মাসে ফেলিপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিদেশীদের পরিবহনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় যার ফলে মৃত্যু, গুরুতর শারীরিক আঘাত ও জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টেক্সাসের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলার বিচারক অরল্যান্ডো গার্সিয়া শুক্রবার তোরেসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা করেছেন। ৫৩ জন অভিবাসীর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য চোরাচালান চক্রের আরেক দোষী সাব্যস্ত সদস্য, আরমান্দো গঞ্জালেস-ওরতেগাকে (৫৫) ৮৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি বলেছেন, ‘মানুষের দুর্ভোগ থেকে লাভবান হওয়ার নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তের কারণে, এই অপরাধীরা তাদের বাকি জীবন কারাগারে কাটাবে। আজকের রায় সর্বত্র মানব পাচারকারীদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা, যতক্ষণ না তোমরা কারাগারে থাকো, আমরা বিশ্রাম নেব না।’
আরও পাঁচজন আসামি মারাত্মক চোরাচালান অভিযানে তাদের ভূমিকার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং এই বছরের শেষের দিকে তাদের সাজা ঘোষণা করা হবে। চোরাচালান চক্রের আরেক অভিযুক্ত সদস্য, রিগোবার্তো রামন মিরান্ডা-ওরোজকোকে (৪৮) গুয়াতেমালা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরে তার বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
মার্কিন কর্তৃপক্ষের মতে, মেক্সিকো, গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাস থেকে আসা অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য পাচারকারীরা প্রতি ব্যক্তির কাছ থেকে ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার নেয়। ২০২২ সালের ২৭ জুন বা তার কাছাকাছি সময়ে আট শিশু ও এক গর্ভবতী নারীসহ কমপক্ষে ৬৪ জন অভিবাসীকে ৫৩ ফুট (১৬ মিটার) লম্বা একটি ট্র্যাক্টর-ট্রেলারে করে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত পার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
ট্রেলারটির এয়ার কন্ডিশনিং ঠিকমতো কাজ করছিল না এবং সান আন্তোনিওর দিকে উত্তর দিকে যাওয়ার সময় ট্রাকের ভেতরে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ট্রেলারটি সান আন্তোনিওতে পৌঁছানোর সময় আটচল্লিশ জন মারা যান এবং পরে হাসপাতালে আরো পাঁচজন মারা যান। মৃতদের মধ্যে ছয় শিশু ও গর্ভবতী নারীও ছিলেন।
সূত্র: এএফপি
এসজেড