রাজনীতিচিন্তক ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ৫ আগস্টের ঘটনার মাধ্যমে তরুণরা আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব এই পরিবর্তনের ধারাকে সুসংগঠিত করা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান, রাষ্ট্রগঠন ও আমাদের দায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ৫ আগস্ট একটি বড় ঘটনা। আমি আজ যেসব কথা বলছি, তা বলা সম্ভব হয়েছে ওইদিনের পরিবর্তনের জন্যই। আমাদের পথ রচনার জন্য এখন প্রয়োজন যৌথ রাজনৈতিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের কৌশল খুঁজে বের করা। আমার বিশ্বাস, পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদের সেই পথে এগিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি বিকেন্দ্রীভূত রাষ্ট্রব্যবস্থা চাই, যেখানে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। গুলশান বা বনানীর হাতে দেশের সম্পদ আর তুলে দেওয়া হবে না। রংপুরের সম্পদ রংপুরেই কাজে লাগবে। ঢাকাকেন্দ্রিক শাসন নয়, আমরা চাই জবাবদিহিমূলক সরকার ও শক্তিশালী স্থানীয় প্রশাসন।
রুহানিয়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রুহানিয়াত হলো সেই শক্তি, যা মানুষকে আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করে। এটা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের বিষয় নয়। বরং, এটা সামষ্টিক মঙ্গলের জন্য উৎসর্গ করার মানসিকতা। এজন্য আমাকে জামায়াত বা হেফাজত মনে করবেন না।
শ্রমিক শ্রেণির বিপ্লবের প্রসঙ্গে মার্কসবাদী চিন্তার দিক উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, মার্কস বলেছিলেন, শ্রমিক শ্রেণি বিপ্লব করবে। কিন্তু ইতিহাস দেখিয়েছে, কেবল শ্রমিকদের দ্বারা সেটা হয়নি। প্রয়োজন পেশাদার বিপ্লবীর— যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তায় অসাধারণ সম্ভাবনার খনি ঢুকেছে। এখন সময় এই খনি খননের। আর এই কাজটি ‘জুলাই অভ্যুত্থানের’ পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তরুণদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তরুণরা পরিবর্তনের পথে এগিয়ে এসেছে। এখন আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। যদি ড. ইউনূস প্রকলেমেশন না দেন, তাহলে আমরাই দেব— নতুন বাংলাদেশের ঘোষণা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কবি ও রাজনীতিক চিনু কবির, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রায়হান কবীর, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক এবং তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন কনক রহমান।
thebgbd.com/NA