ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সবজির বাজারে স্বস্তি, কমেছে ইলিশের দামও

মাঘের মাঝামাঝি সময়ে এসে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে আরও বাড়ছে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ। দোকানিরাও এর পসরা সাজিয়ে বসছেন।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫
সবজির বাজারে স্বস্তি, কমেছে ইলিশের দামও ফাইল ছবি

সরবরাহ বাড়ায় বাজারে আরও কমেছে শীতকালীন শাক-সবজির দাম। এতে স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের মাঝে। আর বাজারে কমেছে ডিম-মুরগির ও ইলিশ মাছের দামও।


শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের আগানগর এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।


মাঘের মাঝামাঝি সময়ে এসে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে আরও বাড়ছে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ। দোকানিরাও এর পসরা সাজিয়ে বসছেন। এতে হাতে গোনা কয়েকটি সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও কমেছে বেশিরভাগের দাম।


কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জ্বল বলেন,'বাজারে প্রচুর শীতকালীন সবজির সরবরাহ রয়েছে। এতে দামও কমছে। কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে কোনো কোনো সবজির দাম। তবে দুই-একটি সবজির দাম ওঠানামা করছে। এটি সাময়িক।'

 

বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, লতি ৬০ টাকা ও পটোল ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ২০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, মটরশুঁটি ১০০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ২০-৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ২০-২৫ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৩০, নতুন আলু ২০-২৫ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ব্রকলি ৩০-৪০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।

 

স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৫০ টাকা। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০-২৫ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।

 

সবজির দামের নিম্নমুখী প্রবণতায় খুশি ভোক্তারা। তারা জানান, শীতকাল এলেই কিছুটা দাম কমে। কিন্তু সারাবছর সবজির চড়া দামে অস্থির থাকে বাজার। স্বস্তি রাখতে প্রয়োজনে আমদানি করে সরবরাহ বাড়াতে হবে।

 

বাজারে কমেছে মুরগি ও ডিমের দাম। বর্তমানে কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কমে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৩০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।

 

প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০-১৩৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

 

এদিকে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে অস্থির হয়ে ওঠা ইলিশের বাজারে। কেজিপ্রতি ২০০ টাকার বেশি কমেছে সুস্বাদু এ রুপালি মাছ। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০-১৯০০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০-১৪০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা পর্যন্ত।


রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, 'বাড়তি দামের কারণে চাহিদা কমেছে ইলিশের। এতে বিক্রি কমায় দামও কমতে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে।'


তবে কিছুটা অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য মাছের দাম। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

 

তবে অস্থিরতা কমেনি চালের বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮০ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।

 

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।

 

আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।


thebgbd.com/NIT