দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘন্টা পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির ওপর নতুন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ঘোষণা করেছেন, মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা পাঠাবেন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করার পদক্ষেপ নেবেন। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সোমবার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরেই ট্রাম্প দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যেকোনো ব্যক্তির মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করার বিতর্কিত আদেশ ঘোষণা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি বড় বিষয়।’
মার্কিন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত একটি অধিকার বাতিল করার পদক্ষেপ কঠোর আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, যা একটি অনিবার্য বিষয় বলে প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেন। এই পুশব্যাক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট কারণ আছে, তবে আপনি ঠিক হতে পারেন।’ আরেকটি নির্বাহী আদেশে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আইনি অভিবাসন আমার পছন্দ। আইনি বিষয়টি আমার ভালো লাগে। আমাদের লোক দরকার এবং এতে একেবারেই রাজি। তবে, অবশ্যই আমাদের আইনি অভিবাসন থাকতে হবে।’ এর আগে উদ্বোধনী ভাষণে ট্রাম ঘোষণা করেন, তিনি তার ‘দেশের ওপর ভয়াবহ আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য’ মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা পাঠাবেন।
তিনি বলেন, ‘সমস্ত অবৈধ অনুপ্রবেশ অবিলম্বে বন্ধ করা হবে এবং আমরা লাখ লাখ বিদেশি অপরাধীকে যেখান থেকে তারা এসেছে সেখানে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব।’ হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আনা কেলি আগেই ঘোষণা করেন, প্রশাসন আশ্রয়দান প্রথা বন্ধ করবে।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল
ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম প্রভাব কয়েক মিনিট পরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আশ্রয়প্রার্থীদের অভিভাসন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের চালুকৃত একটি অ্যাপ অফলাইন হয়ে যায়। মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই অ্যাপে ৩০ হাজার লোকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত ছিল।
ট্রাম্পের প্রধান উপদেষ্টা এবং অভিবাসন নীতির প্রতি কট্টরপন্থি স্টিফেন মিলার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেন, দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আগ্রহী সকল অবৈধ অভিবাসীদের এখনই ফিরে যাওয়া উচিত। অনুমোদন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী যে কেউ বিচার এবং বহিষ্কারের মুখোমুখি হবেন।’
আনা কেলি বলেছেন, নতুন প্রশাসন ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনের অধীনে চালুকৃত ‘মেক্সিকোতে থাকুন’ নীতিটিও পুনর্বহাল করবে। এই নিয়মের অধীনে, মেক্সিকান সীমান্তে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আবেদন করেন তাদের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না।
মার্কিন-মেক্সিকান সীমান্তে হতাশা
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অপেক্ষায় মেক্সিকো সীমান্তে বেশ কিছুদিন অপেক্ষায় থাকা ২৭ বছর বয়সী কিউবান তরুণী ইয়াইমে পেরেজ বলেন, ‘যেহেতু আমরা এখানে আছি, দয়া করে আমাদের প্রবেশ করতে দিন। দয়া করে, এখানে আসার জন্য আমরা যে সব পরিশ্রম করেছি সেটা চিন্তা করে আমাদের আপনাদের দেশে প্রবেশ করতে দিন, যাতে আমরা জীবনে নিজেদের আরও উন্নত করতে পারি।’
সূত্র: এএফপি
এসজেড